রপ্তানি বহুমুখী করতে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

সুনির্দিষ্ট কয়েকটি পণ্যের ওপর রপ্তানিতে নির্ভরশীল না থেকে বহুমুখী করতে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে আমাদের পণ্যের চাহিদা খুঁজতে হবে। আমরা রপ্তানিতে সুনির্দিষ্ট কয়েকটি পণ্যের ওপর নির্ভরশীল। একটা দুইটা পণ্যের ওপর নির্ভরশীল থাকলে আমাদের চলবে না। আমাদের রপ্তানিকে বহুমুখী করতে হবে।

রোববার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে বাংলাদেশ-চায়না ফেন্ডশিপ এক্সিভিশন সেন্টারে ২৮তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

পড়ুন: বাণিজ্য মেলা উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের এখন আর রাজনৈতিক না, কূটনীতিক হবে অর্থনৈতিক। আমাদের প্রত্যেকটা কূটনৈতিক মিশনে এই মেসেজ দিয়েছি। ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার কিভাবে আমরা ঘটাবো, সেটার উপরে আমাদের কূটনৈতিক মিশনগুলো কাজ করছে, কাজ করবে। সেটাই আমরা চাচ্ছি।

‘আন্তর্জাতিক বাজারে আমাদের পণ্যের চাহিদা খুঁজতে হবে। আমরা রপ্তানিতে সুনির্দিষ্ট কয়েকটি পণ্যের ওপর নির্ভরশীল। একটা দুইটা পণ্যের ওপর নির্ভরশীল থাকলে আমাদের চলবে না। আমাদের রপ্তানিকে বহুমুখী করতে হবে, এটা আমি বারবার বলছি। সেক্ষেত্রে সুযোগ আরও দিতে হবে। আমরা যে পণ্যটাকে সবচেয়ে বেশি সুযোগ দিচ্ছি, সেটা সফল হচ্ছে। তাহলে আমাদের অন্যান্য পণ্যগুলো কেন বাদ যাবে। তাদেরকেও আমাদের সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে হবে। যাতে তারাও সেভাবে সুযোগ পায়, ভালোভাবে ব্যবসা করতে।’

সরকারপ্রধান বলেন, আমাদের পাটজাত পণ্য রপ্তানি সুযোগ আছে। এটা হচ্ছে পরিবেশবান্ধব একটা পণ্য। এ পণ্যের বিশ্ব বাজারে রয়ে গেছে৷পাটকে বহুমুখী ব্যবহারও একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এক্ষেত্রে গবেষণা অব্যাহত রয়েছে। আমরা ধান থেকে শুরু করে তরি-তরকারি সবকিছু গবেষণা করে উৎপাদন বৃদ্ধি শুরু করেছি। যেগুলো শুধুমাত্র শীতকালে পাওয়া যেতো এখন ১২ মাস পাওয়া যায়৷ পাটকে বহুমুখী ব্যবহার করে রপ্তানি করার ভালো সুযোগ আছে। 

‘চামড়া আমাদের দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ পণ্য। চামড়া সংরক্ষণ এবং চামড়া বহুমুখী ব্যবহার করা, চামড়া জাত পণ্য রপ্তানি করা। পাট ও চামড়া সংমিশ্রণ্য যে পণ্য সেগুলোর বিশ্ববাজার রয়ে গেছে। এক্ষেত্রে আমাদের আরও গুরুত্ব দিতে হবে। গার্মেন্টসে যেই সুযোগ দিয়েছি অন্যান্য ক্ষেত্রে সেই সুযোগ দেওয়া আমাদের দরকার।’

নারীদের কর্মসংস্থান বাড়ানো ও তাদের স্বাবলম্বী করার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এর মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত হবে। বাড়িতে ও সমাজে তাদের একটা জায়গা (অবস্থান) তৈরি হবে। নারীদের কর্মসংস্থান করে দেওয়ার জন্য আমি এবার এই ২৪ সালে হস্তশিল্পকে বর্ষপণ্য হিসেবে ঘোষণা করছি।

কোভিডকালীন অন্যান্য দেশের তুলনায় দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোভিড অতিমারি চলাকালীন অন্যান্য দেশের মানুষ যেখানে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল, সেখানে বাংলাদেশের অগ্রগতি দৃশ্যমান ছিল।

ক্রয়ক্ষমতা বাড়ানোর আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, দেশের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়াতে কাজ করছে সরকার।

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইস‌লাম টিটু‌র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস-চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসান। 

অনুষ্ঠানে নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুব আলম উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *