বিএনপি চেয়ারপার্সনকে বিদেশে পাঠানোর বিষয় পর্যালোচনা করছে মেডিকেল বোর্ড : ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন

বিশেষ প্রতিনিধি : দ্রুততম সময়ের মধ্যেই বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর বিষয়টি পর্যালোচনা করছে মেডিকেল বোর্ড।আজ বৃহস্পতিবার নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপি চেয়ারপার্সনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন একথা জানান। তিনি বলেন, ‘ম্যাডাম গত সাড়ে ৪ বছর যাবত বিভিন্ন সময়ে আজকে ৪৭৯তম দিন উনি (বেগম খালেদা জিয়া) এভারকেয়ার হাসপাতালে। আমরা উনাকে গত ২১আগস্ট রিলিজড করে বাসায় নিয়ে এসেছিলাম, গতকালকে (১২ সেপ্টেম্বর) আবার উনাকে ভর্তি করতে হয়েছে । ’ তিনি বলেন, ‘কথা আসবে আপনারা উনাকে বাইরে নিচ্ছেন না কেনো? একজনকে বাইরে নিতে হলে শারীরিক সুস্থতা প্রয়োজন। প্লেনে উঠতে হলে নেগেটিভ প্রেসার সহ্য করার মতো সুস্থতা থাকতে হয়। ফ্লাই করার জন্য নেগেটিভ প্রেসার আছে সেটা কতটুকু? ল্যান্ড করার সময়ে কতটুকু উনি সহ্য করতে পারবেন, সেটি গল্পের বিষয় না, সেটি একাডেমিক, প্রফেশনাল ও সায়েন্টিফিক বিষয়। মেডিকেল বোর্ড সেই বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে দেশি-বিদেশি সদস্যরা আলোচনা করছেন এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে শারীরিকভাবে উনি একটু সুস্থ’ হলেই উনাকে যত দ্রুত চিকিৎসার জন্য বাইরে নেয়ার যে চেষ্টা উন্নত সেন্টারে ফলোআপের জন্য।’কেনো উন্নত সেন্টারে নেয়া জরুরী উল্লেখ করে অধ্যাপক জাহিদ বলেন, ‘কারণ উনার কিছু রোগের সৃষ্টি হয়েছে যেগুলো সত্যিকার অর্থে বাইরের আধুনিক সেন্টারে নিয়ে দেখানো ছাড়া এবং তাদের (বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের) মতামত নেয়া ছাড়া আর কোনো গত্যন্তর নেই।’তিনি বলেন, ‘ম্যাডামের জন্য আপনারা সবাই দোয়া করবেন। উনি আাপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীর কাছে সুস্থতার জন্য দোয়া চেয়েছেন।’ডা. জাহিদ বলেন, ‘শেখ হাসিনার সরকার ম্যাডামকে জেলে নেয়ার পর থেকে তিনি একাকিত্বে, উনার চিকিৎসা না করানো এবং উনাকে আস্তে আস্তে একদম সংকটাপন্ন একটা অবস্থায় রেখে দেয়া বিগত সরকারের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার অংশ ছিল।’তিনি আরও বলেন, ‘হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছিলো বিএসএমএমইউতে, সেখানে যে চিকিৎসা হওয়া উচিত হলো কোনো কিছুই সঠিকভাবে হয়নি। যার জন্যই ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা এই পর্যায়ে পৌঁছেছে, উনাকে কয়েকদিন পরপরই দেখা যাচ্ছে হাসপাতালে নিতে হচ্ছে।’বধবার মাঝ রাতে অর্থাৎ রাত ১টা ৪০ মিনিটে গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’ থেকে বিএনপি চেয়ারপার্সনকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়।জাহিদ জানান, ‘মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাতে ম্যাডামকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ম্যাডামকে ভর্তি করা হয়েছে। উনি কেবিনে আছেন। মেডিকেল বোর্ড উনার বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা দিয়েছেন। সেগুলোর কাজ চলছে। অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুদারের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল বোর্ডের অধীনে চিকিৎসাধীন আছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া।৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, ফুসফুস ও কিডনি জটিলতা, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন।গত বছরের লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত বিএনপির চেয়ারপার্সনের রক্তনালীতে অস্ত্রোপচার করা হয় গত বছরের ২৭ অক্টোবর। যুক্তরাষ্ট্র থেকে তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এনে বেগম খালেদা জিয়ার রক্তনালীতে অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল।তাঁর স্বাস্থ্য কিছুটা স্থিতিশীল হলে পাঁচ মাসের বেশি সময় হাসপাতালে তাঁকে টানা চিকিৎসা নিতে হয়েছিল।গত ২৫ জুন এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়ার হৃদযন্ত্রে পেসমেকার বাসানো হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *