নাইজেরিয়ায় খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় আড়াই কোটি মানুষ

বিশেষ প্রতিনিধি : লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি এবং একটি নৃশংস বিদ্রোহ ইতিমধ্যেই উত্তর-পূর্ব বোর্নো রাজ্যের নাইজেরিয়ানদের জন্য তাদের পরিবারকে খাদ্য সরবরাহ কঠিন করে তুলেছে। সেপ্টেম্বরে যখন একটি বাঁধ ভেঙে রাজ্যের রাজধানী এবং আশেপাশের কৃষিজমি প্লাবিত হয়, তখন বহু লোককে সহায় সম্বলহীন হতে হয়েছে।

এখন এসব লোক চরমপন্থি বোকো হারাম বিদ্রোহীদের এবং সেনাবাহিনীর মধ্যে লড়াইয়ের কারণে যারা বাস্তুচ্যুত হয়েছে তাদের শিবিরে ত্রাণের জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে বাধ্য হচ্ছে। ত্রাণ হিসেবে পাওয়া খাবার যখন ফুরিয়ে যায় তখন তারা স্থানীয় খামারগুলোতে কাজ খোঁজে। সেখানে তারা স্থানীয় দস্যুদের হাতে হত্যা বা ধর্ষণের ঝুঁকিতে থাকে।

রাজ্যের রাজধানী মাইদুগুরিতে থাকা ইন্দো উসমান বলেন, ‘আমি আর কাঁদতেও পারছি না। আমি খুব ক্লান্ত।’

বন্যায় সব ভেসে যাওয়ায় ইন্দো, তার স্বামী এবং তাদের ছয় সন্তান গুবিওতে একটি ভাঙা বাড়িতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন। মাইদুগুরির প্রায় ৯৬ কিলোমিটার  উত্তর-পশ্চিমে এই অসমাপ্ত আবাসন প্রকল্প এখন বাস্তুচ্যুতি শিবিরে পরিণত হয়েছে।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার মতে, নাইজেরিয়ার ৩৬টি রাজ্যের মধ্যে ২৯টিতে প্রবল বর্ষণ ও বন্যা চলতি বছর ১৫ লাখ হেক্টরেরও বেশি ফসলি জমি ধ্বংস করেছে, যার ফলে ৯০ লাখেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

জলবায়ু পরিবর্তনজনিত এই বিপর্যয়ের কারণে নাইজেরিয়ার দুর্বলভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা অবকাঠামো আরো দুর্বল হয়েছে। এছাড়া মুদ্রাস্ফীতির কারণে দুর্বল হয়ে যাওয়া নাইরা মুদ্রা এবং সরকারী জ্বালানি ভর্তুকি বাতিলের কারণে অর্থনীতিতে বড় ধরনের বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। চাল ও মটরশুটি জাতীয় খাদ্যের মূল্য অঞ্চল ভেদে এক বছরে দ্বিগুণ, তিনগুণ,  এমনকি চারগুণ বেড়েছে।

জাতিসংঘ জানিয়েছে, নাইজেরিয়ার দুই কোটি ৫০ লাখ মানুষ তীব্র খাদ্য ও পুষ্টির নিরাপত্তাহীনতায় বাস করছে। আগামী জুন-আগস্টের মধ্যে এই সংখ্যা বেড়ে তিন কোটি ৩০ লাখ হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *