হেফাজত ইসলামের বাধার মুখে অভিনেত্রী পরীমনির অনুষ্ঠান বাতিল!

সেলিম রেজা রিয়েল : টাঙ্গাইল জেলায় একটি শোরুম উদ্বোধনের জন্য চিত্রনায়িকা পরীমণির আগমনের কথা ছিলো। এই খবর তার ভক্তদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছিলো। তবে স্থানীয় ‘ধর্মপ্রাণ’ মানুষদের মধ্যে এ নিয়ে শুরু হয় সমালোচনা। হেফাজতে ইসলামসহ বাংলাদেশের বেশকিছু ইসলামিক সংগঠন পরীমনির আগমন ঠেকানোর জন্য প্রচারণা শুরু করে। একপর্যায়ে চাপের মুখে শোরুম কর্তৃপক্ষ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি স্থগিত করতে বাধ্য হন।
রবিবার বিকেলে কালিহাতি উপজেলার এলেঙ্গার টিন মার্কেটের শোরুমটির উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিলো।

স্থানীয়রা জানান, গত ১৫ দিন ধরে শোরুম কর্তৃপক্ষ মাইকিং করে জানাচ্ছিলেন যে, পরীমনি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন। তবে গত ২-৩ দিন ধরে হেফাজতে ইসলামসহ স্থানীয় ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা পরীমনির আগমন ঠেকাতে নানা কর্মসূচির ঘোষণা দেন এবং আন্দোলনসহ অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। এতে চাপের মুখে শোরুম কর্তৃপক্ষ অনুষ্ঠানটি স্থগিত করেন।

শোরুমের মালিক মীর মাসুদ রানা আমাদের প্রতিনিধিকে টেলিফোনে জানান, বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রী পরীমনির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আসার কথা ছিলো, কিন্তু বাংলাদেশের হেফাজতে ইসলাম আন্দোলন শুরু করে দেয়। তারা জানান, পরীমনি আসলে সমস্যা হবে। মসজিদে-মসজিদে এই নিয়ে আলোচনা হয়েছে। হেফাজতে ইসলামের এক নেতা ফোন করে বিষয়টি থানায় জানালে, পুলিশের পক্ষ থেকে নিষেধ করা হয়।

হেফাজতে ইসলামের যুব-বিষয়ক সম্পাদক মুফতি সুলাইমান হাবিব তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, টাঙ্গাইল জেলার এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে শোরুম উদ্বোধনের জন্য অভিনেত্রী পরীমনির আসার কথা ছিলো, তবে স্থানীয় ধর্মপ্রাণ মানুষদের মধ্যে ব্যাপক বিরোধ সৃষ্টি হওয়ায় আমি শোরুমের মালিকের সঙ্গে কথা বলে অনুষ্ঠানটি স্থগিত করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছি।

কালিহাতি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আবুল কালাম ভূঁইয়া টেলিফোনে বলেন, ‘হুজুররা কিছু সমস্যার সৃষ্টি করেছিলো, পরে কর্তৃপক্ষ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি স্থগিত করেছেন।’ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহাদাত হুসেইন টেলিফোনে বলেন, স্টোর কর্তৃপক্ষ আমার কাছে অনুমতি নিতে এসেছিলো। আমি তাদের কিছু শর্ত দিয়েছিলাম, যেনো কোনো ধরনের যানজট বা জনদুর্ভোগ না হয়। তারা রাজি হয়েছিলো, তবে অনুষ্ঠানের শেষ অবস্থা সম্পর্কে আমি নিশ্চিত নই।

বাংলাদেশে সিনেমা-বিনোদন বন্ধ করে দেওয়া হোক’, ক্ষুব্ধ পরীমণি

এদিকে অনুষ্ঠান বাতিলে ক্ষোভ প্রকাশ করে পরীমনি ফেসবুকে একটি স্টেটাসে লিখেছেন, ‘এত চুপ করে থাকা যায় নাকি! পরাধীন মনে হচ্ছে। শিল্পীদের এত বাধা কেন আসবে!? অনিরাপদ অনুভব করছি! এমন স্বাধীন দেশে নিরাপদ নই কেন আমরা! মেহজাবীন, পড়শী এর আগে এমন হেনস্থার শিকার হয়েছেন! ধর্মের দোহাই দিয়ে কি প্রমাণ করতে চলেছেন তারা! কি বলার আছে আর…। এ দেশে সিনেমা/ বিনোদন সব বন্ধ করে দেওয়া হোক তাহলে! তাহলে কি আমরা ধরে নেব, আমরা ইমোশনালি ব‍্যবহার হয়েছিলাম তখন! নাকি এখন হচ্ছি? কোনটা? এই দায়ভার কিন্তু আমাদের সবার নিতে হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *