মেয়ের জন্য চাকরি চাইলেন রুপনার মা 

মেয়ের জন্য অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে চাকরির আবেদন জানিয়েছেন নারীদের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ  জয়ী দলের গোলরক্ষক রুপনা চাকমার মা কালাসোনা চাকমা।

তিনি বলেছেন, ‘সারা বছর ফুটবল খেলে জীবন চলবে না রুপনার।। সে তো আর আগের মতো দুঃখ কষ্ট সহ্য করে কাজ করেও খেতে পারবে না। তাই বর্তমান সরকার যদি রুপনাকে একটি চাকরি দেয় তাহলে ভালো হবে।’ 

রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলার ঘিলাছড়ির দুর্গম ভুইয়াদাম গ্রামে রুপনা চাকমার পরিবারের বসবাস।

কালাসোনা চাকমা মেয়ের সফলতায় অত্যন্ত খুশি। তিনি বলেন, ‘সে গতবারের মতো এবারো ভালো খেলেছে। এতে আমাদের গ্রামের মানুষ খুব খুশি। গতবার সরকার  একটি ঘর করে দিয়েছে।’ 

২০২২ সালে প্রথমবার সাফ নারী ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর সরকারের পক্ষ থেকে রুপনার বাড়ি ও চলাচলের রাস্তা নির্মাণ করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। এরপর রুপনার পরিবারকে চার কক্ষের একটি সেমিপাকা ঘর করে দেয় প্রশাসন।

শুক্রবার (১ নভেম্বর) দুপুরে রুপনার বাড়ির ভেতরে ঢুকতেই চোখে পড়ে ২০২২ সালে বিগত সরকারের তরফ থেকে বিভিন্ন সময়ে দেওয়া কৃতিত্বের স্মারক। শো-কেস ভর্তি নানা ট্রফি ও ক্রেস্ট। রয়েছে অনেক ছবিও।

রুপনা চাকমার ঘরের ভেতরে পানির সমস্যা এখনো সমাধান হয়নি। এ জন্য ঘরের ভেতরের বাথরুম এখনো ব্যবহার করতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন রুপনার পরিবারের সদস্যরা।

ভুইয়াদাম গ্রামের বাসিন্দারা জানান, চার ভাই-বোনের মধ্যে সবার ছোট রুপনা চাকমা। ছোটবেলা থেকেই খেলাধুলার প্রতি মনোযোগী তিনি। তার জীবনের বেশিরভাগ সময় কেটেছে মা ও ভাই-বোনকে ছেড়ে। ছোটবেলায় খেলাধুলা ও পড়ালেখার জন্য রুপনা চলে আসেন রাঙামাটির কাউখালীর ঘাগড়ায়। বাবা হারানো মেয়েটির লড়াই ছিল খুবই কঠিন। রুপনার পরপর দুই বারের সফলতা অর্জনে গ্রামের মানুষ অনেক  খুশি। তার কারণে দেশের মানুষ এখন পাহাড়ের দুর্গম ভুইয়াদাম গ্রামকে চিনতে পারছে। সামনে যাতে রাস্তাটি হয় সেই দাবি জানিয়েছেন তারা।

রুপনা চাকমার বড় ভাইয়ের স্ত্রী সুশীলা চাকমা বলেন, ‘মোবাইল ফোনে খেলা দেখেছি রুপনার । আমার খুব ভালো লেগেছে, সে খুব ভালো খেলছে। এলাকার মানুষও তার খেলা দেখে খুবই আনন্দিত। আমি তার ভবিষ্যত জীবনের সফলতা কামনা করছি।’

রুপনার গ্রামের বাসিন্দা প্রীতিময় চাকমা বলেন, ‘রুপনা আমাদের গ্রামের গর্ব। সে খুব ভালো গোলরক্ষক। সরকারের কাছে একটি আবেদন থাকবে, তার বাড়িটিতো করে দিয়েছে এখন রাস্তাটি যাতে অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে করে দেন তারা।’

ঘাগড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ফুটবল খেলোয়াড় জোলেখা চাকমা বলেন, তাদের (রুপনা, ঋতুপর্ণা) মতো খেলার চেষ্টা করবো। ভবিষ্যতে যাতে জাতীয় দলে খেলতে পারি সে চেষ্টাই থাকবে। ওদের খেলা দেখেছি, খুবই ভালো লেগেছে।’

রুপনার বড় ভাই শান্তি জীবন চাকমা বলেন, ‘আমি পুরো খেলাটা দেখেছি মোবাইলে। খেলা শেষে আমরাতো খুশিতে নাচানাচি করছিলাম। খেলাটি দেখে খুবই ভালো লেগেছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *