বিশ্ববিদ্যালয় না দিলে তিতুমীর ‘ক্লোজডাউন’, বলছেন শিক্ষার্থীরা

রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবি না মানা হলে অনির্দিষ্টকালের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি ‘ক্লোজডাউন’ করার কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (১৮ নভেম্বর) রাতে সরকারি তিতুমীর কলেজের মূল ফটকের সামনে সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, ‘ক্লোজডাউন’ কর্মসূচি চলাকালে সরকারি তিতুমীর কলেজে কোনো ধরনের শিক্ষা কার্যক্রম চলবে না।

আগামীকালের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত না এলে আরও কঠোর কর্মসূচির হুমকিও দিয়েছেন তারা। 

তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে সোমবার দুই দফা কর্মসূচি পালন করেছেন ওই কলেজের শিক্ষার্থীরা। সকালে কলেজের প্রধান ফটক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তারা। পরে দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত মহাখালীতে মূল সড়ক ও রেললাইন অবরোধ করা হয়। এ সময় ঢাকাগামী উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়। এতে শিশুসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। বিকেল ৫টার দিকে অবরোধ তুলে নেন শিক্ষার্থীরা।

দ্বিতীয় দফায় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় কলেজের প্রধান ফটকের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এর ফলে মহাখালীর আমতলী মোড় থেকে গুলশান-১ অভিমুখী সড়কে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রাত সাড়ে ৯টায় অবরোধ তুলে নিলে যানচলাচল স্বাভাবিক হয়।

একই দাবিতে শিক্ষার্থীদের ১৪ জনের একটি প্রতিনিধিদল রাতে সচিবালয়ের সামনে অনশনে বসেন। রাত ১০টার দিকে অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন তারা।

তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো:
১. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি বাতিল করে ৭ কলেজ থেকে তিতুমীর কলেজকে পৃথক করতে হবে।
২. তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের লক্ষ্যে কমিশন গঠন করতে হবে।
৩. তিতুমীরকে একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় করার রূপরেখা প্রণয়ন করতে হবে।

আন্দোলন সম্পর্কে জানতে চাইলে তিতুমীর কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী নোমান হাসান বলেছেন, আমাদের দাবি যৌক্তিক। আমাদের সিনিয়ররা দীর্ঘদিন ধরে এই এ আন্দোলন করে যাচ্ছেন। আমরা চাই, দ্রুত কমিশন গঠন করে তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর করা হোক। আমরা দেশের সাধারণ মানুষদেরকে বারবার ভোগান্তিতে ফেলতে চাই না। কর্তৃপক্ষকে বলছি, দ্রুত আমাদের দাবি মেনে নিন, না হলে আরো কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

সরকারি তিতুমীর কলেজের অধ্যক্ষ শিপ্রা রানী মন্ডল রাইজিংবিডিকে বলেছেন, আমি বিকেলে শিক্ষার্থীদের বলছি, তোমরা ক্যাম্পাসে ফিরে আসো। তারা ফিরে আসছিল। কিন্তু, পরবর্তীতে আবার কলেজে প্রধান ফটকে অবস্থান নিয়েছে। আমি ওদের দাবি সম্পর্কে অবগত আছি। কিন্তু, এক্ষেত্রে আমার হাতে কিছু নেই।

এদিকে, মহাখালীতে ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনায় মামলা হতে পারে বলে জানা গেছে। রেল কর্তৃপক্ষ বলছে, পুলিশ–আরএনবি রেল প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

সরকারি তিতুমীর কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে গত দুই মাসে একাধিকবার সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। গত ২৪ অক্টোবরও একই দাবিতে সড়ক অবরোধ করেন তারা। তাদের আন্দোলনে রাজধানীজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *