চাঁদপুর প্রতিনিধি : চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলার বলাখাল গ্রামে জমি দখল ও চাঁদাবাজির জেরে মোবাইল ব্যবসায়ী ইমাম হোসেন (৩৯)-কে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। দুর্বৃত্তরা শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যার চেষ্টা করলেও স্থানীয়দের তৎপরতায় রক্ষা পান তিনি। হামলার পর ইমাম হোসেন থানায় অভিযোগ করতে গেলেও হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ তার অভিযোগ গ্রহণ করেনি। এ ঘটনার পর থেকে তিনি ও তার পরিবার চরম আতঙ্কে রয়েছেন।
জানা যায়, গত বুধবার জমি সংক্রান্ত সমাধানের জন্য হাজীগঞ্জ ভূমি অফিসে যান ব্যবসায়ী ইমাম হোসেন। কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে স্থানীয় এমারত স্টোরের কাছে পৌঁছালে চার দুর্বৃত্ত তার পেছন থেকে এসে প্লাস্টিকের ব্যাগ দিয়ে মাথা ঢেকে শ্বাসরোধের চেষ্টা করে। জীবন বাঁচাতে ইমাম চিৎকার শুরু করলে এমারত স্টোরের কর্মচারী ইউনুস মিয়া এগিয়ে এসে দুর্বৃত্তদের প্রতিহত করেন। চিৎকার শুনে স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে ছুটে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী এমারত স্টোরের কর্মচারী ইউনুস মিয়া বলেন, “আমি দোকানে কাজ করছিলাম। হঠাৎ দেখি, কয়েকজন লোক ইমামকে আক্রমণ করছে। আমি দৌড়ে গিয়ে তাকে উদ্ধার করি এবং আশপাশের লোকজনকে ডাক দিই। তখন হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।”

এই বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাহরাইন থেকে দেশে ফিরে ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে বলাখাল বাজারে “এ প্লাস ফোন এক্সচেঞ্জ” নামে একটি মোবাইল ও মোবাইল অ্যাক্সেসরিজের দোকান চালু করেন ইমাম হোসেন। ব্যবসা শুরু করার পর থেকেই ১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মিনুদ্দিন মিয়াজির অনুসারীরা তার কাছে নিয়মিত চাঁদা দাবি করতে থাকে। প্রতি মাসে তাকে মোটা অংকের চাঁদা দিতে বাধ্য করা হতো। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তার ব্যবসায় হামলা, এবং তাকে হয়রানি ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছিল বলে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে।
বলাখাল গ্রামের বাসিন্দা আরমান রহমান জানান, ইমাম হোসেনের প্রায় ৩৫ ডেসিমেল জমির ওপর নির্মিত একটি ৫ তলা বাড়ি রয়েছে, যা দখলের জন্য দীর্ঘদিন ধরে তার দুই সৎভাই মো. বিলাল হোসেন ও জাহাঙ্গীর হোসেন ষড়যন্ত্র চালিয়ে আসছে। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসের শেষের দিকে, তারা স্থানীয় সন্ত্রাসীদের সহায়তায় ওই জমিতে বালি ও ইট ফেলে দখলের চেষ্টা শুরু করে। ইমাম হোসেন এ কাজে বাধা দিতে গেলে তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়। আরমানের মতে, স্থানীয় সন্ত্রাসীদের প্ররোচিত করে তার দুই ভাই পরিকল্পিতভাবে বাড়িটি দখল করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এমনকি, বাড়ি দখলের উদ্দেশ্যেই ইমাম হোসেনকে হত্যা করার চেষ্টা করা হতে পারে বলে ধারণা করেন তিনি।
এ বিষয়ে স্থানীয় থানার ওসি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।