কথা রেখে মুখে হাসি, হৃদয়ে একটু আক্ষেপ

নিজস্ব প্রতিনিধি : নিউ জিল্যান্ডকে এর আগে একাধিকবার হারিয়েছে বাংলাদেশ। দ্বিপক্ষীয় সিরিজের পাশাপাশি বৈশ্বিক আসরেও জয় আছে। তাদের হারানো নতুন কিছু নয়। কিন্তু তাদের মাটিতে জয় অধরা ছিল। অধরা সেই সাফল্য শনিবার ধরা দিলো। নেপিয়ারে বাংলাদেশ ৯ উইকেটে উড়িয়ে দিয়েছে নিউ জিল্যান্ডকে।

সিরিজ শুরুর আগে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত কথা দিয়েছিলেন, এবার সীমিত পরিসরে জয় নিয়েই দেশে ফিরতে চান। প্রথম দুই ওয়ানডেতে না পারলেও তৃতীয় ওয়ানডেতে জিতলেন ঠিকই। কথা দিয়ে কথা রাখায় হাসি ফুটেছে তাদের মুখে। তবে হৃদয়ে একটু আক্ষেপও কাজ করছে। আর একটু ভালো খেললেই সিরিজ জেতা যেত। সেই আক্ষেপই এখন পোড়াচ্ছে অধিনায়ককে।

সিরিজ শুরুর আগে শান্ত বলেছিলেন, ‘এর আগে কোনো দলই করতে পারেনি (জিততে পারেনি)… আমাদের বাংলাদেশ দল যতবারই এসেছে এখানে। তবে কোনো না কোনো একটা গ্রুপকে তো করতে হবে। আমার মনে হয় যে এই গ্রুপটির সেই সামর্থ্য আছে এবং সবাই বিশ্বাস করে যে, এ বছর আমাদের ভিন্ন ফল হবে।’ 

তৃতীয় ওয়ানডেতে জয়ের পর শান্ত বলেছেন, ‘যদি ইতিহাস চিন্তা করেন, তাহলে অবশ্যই গর্ব করার মতো ফল করেছি। একটা ম্যাচ জিততে পেরেছি।’ আর আফসোস, আক্ষেপের কথা বলতে গিয়ে শান্ত যোগ করেন, ‘আমাকে যদি ব্যক্তিগতভাবে জিজ্ঞেস করেন, আমি সিরিজ জিততেই এসেছিলাম এবং এটা বলার সময় আমি সত্যিকার অর্থেই বুঝিয়েছিলাম। প্রথম ম্যাচে বৃষ্টির জন্য আমরা হয়তো কিছুটা দুর্ভাগা ছিলাম। আমাদের বোলিং অপশনগুলো শেষ হয়ে গিয়েছিল।’

সব মিলিয়ে শান্ত নিজের কথার সারাংশ টেনেছেন এভাবে, ‘অবশ্যই আমরা খুশি যে জিততে পেরেছি। তবে সিরিজ জিততে পারলে আরও ভালো লাগত।’

শান্তর এমন কথা দিয়ে কথা রাখা নতুন কিছু নয়। বিশ্বকাপের পর ঘরের মাঠে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ শুরুর আগে বলেছিলেন, সিলেটে ম্যাচ জিততে চান। সত্যিই নিজের অধিনায়কত্বের প্রথম ম্যাচে জয় তুলে নিয়েছিলেন শান্ত। এবারও তেমন কিছুই করলেন। নিজেদের ওপর বিশ্বাস, জয়ের তীব্র আকাঙ্খা, নিজেদের সামর্থ্যের ওপর প্রবল আত্মবিশ্বাস, প্রক্রিয়া মেনে পরিকল্পনা সাজানো আর হার না মানসিকতার কারণে প্রতিপক্ষের সামনে দুমরে মুচরে পড়ছে না বাংলাদেশ তা মাঠের ক্রিকেটে দেখা যাচ্ছে।

শান্তর কথাতে উঠে এলো সব, ‘আমার কাছে ব্যক্তিগতভাবে মনে হয়, খেলা শুরুর আগে আমাদের কাজটা কী… আমাদের প্রস্তুতি, কাজের প্রতি আমরা কতটা সৎ, আমরা কী করতে চাই, এসব গুরুত্বপূর্ণ। সবচেয়ে বড় কথা যে, আমরা কতটুকু বিশ্বাস করছি। দল হিসেবে আমার খুবই বিশ্বাস যে এই দল আরও ভালো করতে পারে। আমার কাছে সবসময়ই গ্রুপটাকে দেখে মনে হয়েছে যে, এই গ্রুপের ওই ক্ষুধাটা আছে যে এখানে এসে ম্যাচ জিততে পারি, সিরিজ জিততে পারি।’

সিরিজ জেতা হয়নি। তাতে শান্তর হৃদয়ে কষ্ট যেমন আছে তেমন শেষ ম্যাচ জিতে প্রাপ্তির আনন্দও আছে। এই আনন্দ নিয়ে টি-টোয়েন্টিতেও সাফল্য চান। নিউ জিল্যান্ডের মাটিতে ওয়ানডের পর টি-টোয়েন্টিতেও জয়ের খাতা খুললে নিশ্চিতভাবে বড় প্রাপ্তি বাংলাদেশের ক্রিকেটে যুক্ত হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *